চিরকুমার ও বাংলার প্রথম বিশ্বজয়ী ভূপর্যটক ছিলেন। তিনি দীর্ঘ সাইকেল ভ্রমনের কাহিনী নিয়ে গল্প ও উপন্যাস মিলিয়ে ৪০ টির ও বেশি বই লিখেন। যেখানে রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ১২ কিঃমিঃ পথভ্রমনের অভিজ্ঞতা। ভূঃ পর্যটক রামনাথ বিশ্বাস এর জম্ম ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে ১৩ জানুয়ারি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার বিদ্যাভূষন পাড়ায়। স্থানীয় হরিশ চন্দ্র হাইস্কুলের ৬ষ্ট শ্রেণীর ছাত্র অবস্থাতেই স্কুল ছেড়ে বিপ্লবী দলে যোগদেন। তার মনে ছিল বিশ্বকে দেখার এক দূর্বার আকাংখা। আর এ উদ্দেশ্যেই ১৯৩১ খ্রি. ৭ জুলাই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বিশ্ব ভ্রমণে প্রথমে সিংগাপুর, কুয়ালালামপুর, জিত্রা শিয়াংলুং হয়ে প্রবেশ করেন থাইল্যান্ডে। থাইল্যান্ড থেকে ইন্দোচীন, চীন, হংকং, কেন্টন, সাংহাই হয়ে পিকিং। পিকিং থেকেমাঞ্চুকো, মুকদেন, আন্তং হয়ে কোরিয়া। কোরিয়া হতে জাপান, জাপান হতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হতে কানাডা এসব দেশ জয় করে পাড়ি জমান ফিলিপাইন, বালি, জাভা, সুমাত্রাসহ ইন্দোনেশিয়ার নানা দ্বীপপুঞ্জে। ইন্দেনেশিয়া সরকার তাঁকে তেমন সহযোগিতা করেননি। পরে সেখান থেকে আবার ফিরে আসেন সিংগাপুরে। সিংগাপুর থেকে আপন দেশে। তারপর খানিকটা বিরতি। পরবর্তীতে ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে ১ জানুয়ারি দ্বিগুন উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বের হন বিশ্ব ভ্রমণে। প্রথমে সিংগাপুর, সিংগাপুর থেকে পিনাং তার পর সমগ্র ভারতবর্ষ ঘুরে দেখেন পরম আগ্রহে। উপমহাদেশে প্রায় এক বৎসর অবস্থান শেষে আফগানিস্তান, ইরান, ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও তুরস্ক ভ্রমণ। তারপর শুরু করেন ইউরোপ দেখা। প্রথমেই বুলগেরিয়া। পরে যুগোশ্লাভিয়া, চেকোশ্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরী, অষ্ট্রিয়া, হলান্ড, জার্মানী, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন, আয়ারল্যান্ড। এই দীর্ঘ পথ ভ্রমণ শেষে ১৯৫০ সালে হবিগঞ্জের মানুষটি স্থায়ীভারে বসবাস শুরু করেন কলকাতায়। ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে ১ নভেম্বর সেখানেই এই চিরকুমার ও বিশ্বের প্রথম বিশ্বজয়ী পর্যটক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
© Habiganj Info. All Rights Reserved by Fileky